বিজয়ের মাসে আরেকটি বিজয়ের অপেক্ষায় বাংলাদেশ দৃশ্যমান হবে স্বপ্নের পদ্মা সেতু, অপেক্ষায় জাতি
বিজয়ের মাসে আরেকটি বিজয়ের অপেক্ষায় বাংলাদেশ। বহু আকাঙ্ক্ষিত এক যাত্রার অবসান হতে যাচ্ছে বৃহস্পতিবার (১০ ডিসেম্বর)। সব কিছু ঠিক থাকলে আজ বসিয়ে দেয়া হবে স্বপ্নের পদ্মা সেতুর সবশেষ স্প্যানটি। ৪১ স্প্যানে দৃশ্যমান হয়ে যাবে পুরো ৬ দশমিক এক পাঁচ কিলোমিটার পদ্মা সেতু। অপেক্ষায় পুরো জাতি, পদ্মার দুই পাড়ের মানুষ।
যাত্রাটা শুরু হয়েছিল এখন থেকে ৩ বছর আগে, ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর প্রথম স্প্যানটি বসানোর মাধ্যমে। সেই সেতুর মধ্যখানের দূরত্বই বলে দিচ্ছে, আর মাত্র একটি স্প্যান। তারপর পদ্মা সেতুর দুই পাড়ের মধ্যে ঘটবে মিলন।
করোনার কারণে আনুষ্ঠানিকতা নেই, তবু এর মধ্যে মাওয়ার কুমারভোগ ইয়ার্ডে সাজিয়ে তোলা হয়েছে স্বপ্নের সেতুর সবশেষ স্প্যানটি। চায়না মেজর ব্রিজ কোম্পানি করছে সেতুর কাজ। স্প্যানের দুই পাশে তাই বাংলাদেশ ও চীনের জাতীয় পতাকা সেটে দেওয়া হয়েছে। দুদেশের সুসর্ম্পকের কথা উল্লেখ করা হয়েছে বড় একটি অংশ জুড়ে। স্প্যানের গায়ে লিখে রাখা হয়েছে, যে শ্রমিকদের শ্রমে-ঘামে কাজের এত অগ্রগতি, তাদের কীর্তিগাথা।
এদিকে পদ্মা সেতুর শেষ স্প্যান ‘২ এফ’ ইয়ার্ড থেকে ভাসামান ক্রেনবাহী জাহাজ ‘তিয়ান ই’ তুলে নিয়ে ১২ ও ১৩ নম্বর খুঁটির কাছে পৌঁছেছে।
বুধবার (৯ ডিসেম্বর) ঘড়ির কাঁটায় বিকেল ৫টা বাজতেই ইয়ার্ড থেকে রওনা হয় ক্রেনবাহী জাহাজ। পরে ৫টা ৪৫ মিনিটে খুঁটির কাছে পৌঁছায় জাহাজটি। ৪১তম স্প্যানটি পৌঁছানোর মধ্য দিয়ে ইয়ার্ডে সেতুর স্প্যানসংশ্লিষ্ট কাজ শেষ হলো।
এ ইয়ার্ডেই ফিটিং করা হয় সব কয়েকটি স্প্যান। স্প্যানটির নিরাপত্তায় সেনাবাহিনী টহল দিচ্ছে। স্প্যানটি স্থাপন পর্যন্ত পদ্মা সেতুর ১২ ও ১৩ নম্বর খুঁটি ও আশপাশ এলাকায় ফেরিসহ সব ধরনের নৌযান চলাচালে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। পুরো এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার ও নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
স্প্যানটি বাংলাদেশ ও চীনের পতাকার রঙে সাজানো ছিল। তবে নিরাপত্তার কারণে কোনো রকম অনুষ্ঠান উদযাপন করা হয়নি।
পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের পরিচালক শফিকুল ইসলাম বুধবার বলেন, সেতুতে স্প্যান বসলেই আমরা অত্যন্ত খুশি হই। তবে একটা বড় মাইলফলক স্পর্শ করবো যখন ৪১টি স্প্যান বসে যাবে।
মাওয়া প্রান্তে এখন ১১টি স্প্যান পাড় ছুঁয়ে দৃশ্যমান, জাজিরা প্রান্তে ২৯টি। মধ্যখানে একটি শূন্যস্থান। সেখানে ৪১তম স্প্যান বসে যাওয়ার পর মাওয়া থেকে জাজিরা, বিনি সুতোয় বেঁধে ফেলা হবে দুই পাড়কে।
শীত-বর্ষায় একেক সময় নদীর ভিন্ন ভিন্ন রূপ ভুগিয়েছে সেতুর কাজে। এরপর স্প্যানের উপর স্ল্যাব বসানোর কাজ থাকায় সেতুর কাজে প্রাকৃতিক কোন জটিলতা থাকবে না আর।